ঝালকাঠি সদরের একটি হাফেজী মাদরাসায় শিশু শিক্ষার্থীদের খেলার শব্দে ঘুম ভেঙে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে ৮ শিক্ষার্থীকে একটি কক্ষে আটকে বেদম মারধরের অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় এক শিক্ষার্থীর বাবার করা মামলায় অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় (৭ আগস্ট) ঝালকাঠি সদরের পোনাবালিয়া গ্রামের কে খান হাফেজী মাদরাসায় শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। 

অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহ ওই মাদরাসার একমাত্র আবাসিক শিক্ষক। তিনি খুলনার খালিশপুরের ইউনুস আলীর ছেলে।

মামলার বরাত দিয়ে ঝালকাঠি সদর থা্নার ওসি খলিলুর রহমান বলেন, ৭ আগস্ট বিকেলে মাদরাসার ছাত্ররা খেলছিল। এসময় শিক্ষার্থীদের খেলার শব্দে শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহের ঘুম ভেঙে যায়। এতে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে মাদরাসার একটি কক্ষের দরজা আটকে ৮ শিক্ষার্থীকে বেদম মারধর করেন। এসময় শিক্ষার্থীরা কান্নাকাটি করলে সবাইকে কক্ষের মধ্যেই আটকে রেখে বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে দেন ওই শিক্ষক। আর মারধরের বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য সকল শিক্ষার্থীকে ভয়ভীতিও দেখান তিনি।  

এদিকে মাগরিবের নামাজের সময় কৌশলে মো. সিয়াম (৯) নামের এক শিক্ষার্থী পালিয়ে যায়। পরে সে কাঁদতে কাঁদতে স্থানীয় পোনাবালিয়া বাজারে গিয়ে বিষয়টি এলাকাবাসীকে জানায়।

বাজারে থাকা শতাধিক ব্যক্তিরা এসময় মাদরাসা ঘেরাও করে শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহকে আটক করে। তারা আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়।

শিক্ষকের বেদম প্রহারে চার শিক্ষার্থী আহত হয়। তারা হলেন, পোনাবালিয়া গ্রামের শামীম খলিফার ছেলে আমিনুল ইসলাম (১০), বাড়ইকরণ গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে মোহাম্মদ সিয়াম (৯), পোনাবালিয়া গ্রামের সুমন হোসেনের ছেলে মো. আমিনুল (৯) এবং একই গ্রামের মো. ইয়াছিন (১৪)। তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আর তুলনামূলক বেশি আহত শিশু সিয়ামকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। আহত অপর শিক্ষার্থীরা যে যার বাড়িতে চলে গেছে।

খবর পেয়ে রাতেই ঝালকাঠি সদর থানা পুলিশ ওই মাদরাসায় গিয়ে শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহকে আটক করে নিয়ে আসে। 

এদিকে নির্যাতনের শিকার মাদরাসা ছাত্র শিশু আল মুবিনের বাবা নুরুল্লাহপুর গ্রামের মো. সুমন খলিফা বাদী হয়ে রোববার (৮ আগস্ট) সকালে  ঝালকাঠি সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ওই শিক্ষককের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় রোববার দুপুরে অভিযুক্ত মাদরাসা শিক্ষককে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলেও জানান ওসি।