প্রত্যেক প্রবাসীরাই একেকটা ডিম পাড়া মুরগী!
যতদিন ডিম দেয় ততোদিন পরিবারের সবার কদর পায়।
ডিম পাড়া শেষ হলে যেমনি করে মুরগীকে জবাই দেয়া হয়, তেমনি করে, সেই প্রবাস থেকে ফেরত আসা ভাইটিকেও অর্থনৈতিক সব অধিকার থেকে বঞ্চিত করে জবাই দেয়া হয়!
আমার জীবনে দেখা শতকরা ৮০ ভাগ প্রবাসীর পরিণাম এমন হয়েছে।
দেশে ফিরে বেচারা বিয়ে করা মাত্রই বাবা মায়ের শত্রু হয়ে যায়। ভাই বোন অন্য নজরে দেখতে থাকে। ভাই বোনের কাছে সেই সদ্য বিবাহিত প্রবাসী ভাইটি আর ভাই থাকে না। পরের মাইয়ার জামাই অথবা ভাবীর স্বামী হয়ে যায়!
বেচারা নিঃস্বত্ব হয়ে নতুন সংসার গড়ার প্রত্যয়ে চল্লিশ বছর বয়সে ফের প্রবাস জীবন বেছে নেয়।
এবার কম বয়সী বৌও জৈবিক চাহিদার চাপে প্রবাসী স্বামীর সঞ্চিত টাকা নিয়ে পর পুরুষের সাথে বিলাসিতা করে !
এই ঘটনা প্রবাসীদের বেলায় একটা আর দুইটা নয়। অগনিত।
অনেক প্রবাসীকে দেখেছি বিশ্বস্ত বৌয়ের একাউন্টে রাখা দশ পনেরো লাখ টাকার জন্য শোক করে না, সে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে, ‘যদি শুনতাম, বৌ আমার পালিয়ে যায়নি। কেউ ওকে কিডন্যাপ করেছে টাকার লোভে। যদি শুনতাম, ওর একাউন্টে রাখা আমার টাকাগুলো অপহরনকারীদের মুক্তিপন দিয়ে আমার সংসারে ছুটে এসেছে!!’
কষ্টকে যদি প্রকারভেদ করতে চান, তবে প্রবঞ্চিত প্রবাসীদের কষ্টকে এক নম্বরে রাখুন।
প্রবাসীরা দেশ, পরিবার, স্ত্রী ও বন্ধু স্বজনদের যতটা ভালবাসে আর কেউ একাধিক বস্তুকে একইভাবে এতটা ভালোবাসে না।
আমার এই কথাটি যদি আপনার বিশ্বাস না হয়, তবে জীবনে অন্তত একবার হলেও দেশের বাইরে একটি বছর কাটিয়ে আসুন।
সর্বশেষ আর একটি কষ্টের তথ্য দেই।
বর্তমানে একজন প্রবাসীর কষ্ট স্বয়ং তার মাও বুঝে না। আপনি ভাই-বোন অথবা বাবা হয়ে আর কতটুকু বুঝবেন!
ভুল হলে ক্ষমা এবং সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন…
সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন….
লেখকঃ মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন
প্রবাসী, সংযুক্ত আরব আমিরাত।
সহ-অর্থ সম্পাদক,
পেকুয়া উপজেলা প্রবাসী ঐক্য পরিষদ।
কপিরাইট সত্ত্ব-২০২২ ছাত্রছাত্রী ডট কম, কারিগরি সহায়তায়ঃ বিগবস সফট বিডি
Leave a Reply