1. admin@chattrachattri.com : admin :
  2. bigboss@yahoo.com : bb :
  3. shamkabir2003@gmail.com : shamkabir :
কি ভয়ংকর তথ্য! নিজ হাসপাতালেই করোনা আক্রান্ত ডাক্তার চিকিৎসা বঞ্চিত - ছাত্র-ছাত্রী ডট কম
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৭:৪৭ অপরাহ্ন

কি ভয়ংকর তথ্য! নিজ হাসপাতালেই করোনা আক্রান্ত ডাক্তার চিকিৎসা বঞ্চিত

  • মঙ্গলবার, ২ জুন, ২০২০
  • ৫৩১ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালে ২০১৮ সালে সাংবাদিক রুবেলের ফুটফুটে শিশু কন্যার মর্মান্তিক মৃত্যুর কথা এখনো অনেকে ভুলতে পারেনি। সে সময় ম্যাক্স হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলনে এরা পরিবর্তন হবে বলে অনেকে মনে করেছে। কিন্তু না, এবার খোদ নিজ হাসপাতালের চিকিৎসককেই চিকিৎসা বঞ্চিত রাখার মতো অমানবিক ঘটনার জন্ম দিয়েছে তারা।

শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও এমনই কাণ্ড ঘটেছে চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালের চেম্বার করা চিকিৎসক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এএসএম লুৎফুল কবির শিমুলের সাথে। তিনি মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত থাকলেও সংযুক্ত আছেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের কনসালট্যান্ট হিসেবে। এমনকি ওই ম্যাক্স হাসপাতালে চেম্বার করেন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ তার চিকিৎসক স্ত্রীও।

ডা. এএসএম লুৎফুল কবির শিমুল গত রোববার (৩১ মে) রাতে এই মর্মান্তিক ঘটনার সবিস্তারে বর্ণনা করেছেন তার ফেসবুকে পোস্টে।

তিনি পোস্টে লিখেছেন, ‘অপ্রিয় সত্যকথন কেউ আঘাত পেলে পাক। আমি তখন খুবই অসুস্হ, অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯০ এর নিচে নেমে যাচ্ছে। প্রথম কোভিড টেস্ট নেগেটিভ আসার পরেও দ্রুত স্যাচুরেশন নেমে যাওয়ায় আমি চিন্তা করেছিলাম এটা কোভিড হতে পারে।আমি জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি হবার ব্যাপারে একটু দ্বিধাগ্রস্ত ছিলাম। চিন্তা করলাম আমার হাসপাতাল (ম্যাক্স হাসপাতাল) কেবিনে ভর্তি হয়ে অক্সিজেন নেব।পরে আরেকটি স্যাম্পল আসলে চমেক বা জেনারেলে ভর্তি হব। ঐ প্রতিষ্ঠানের এমডি মিথ্যা কথা বলে আমাকে ভর্তি নিতে চাইলেন না। বিক্ষিপ্ত এবং এলোমেলো কথা বলে ফোন কেটে দিলেন। একটা অক্সিজেন সিলিন্ডারও দিলেন না।’

তিনি আরও লেখেন, ‘পরবর্তীতে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাসায় অক্সিজেন পাঠালেন, আইভি ক্যানুলেশন করালাম ওখানে। ওনারা কেবিনও প্রস্তুত রেখেছিলেন আমার জন্য। যদিও ওখানে ভর্তি হইনি।পরদিন চমেকে ভর্তি হলাম। আমার জন্মস্থান চমেকহাসপাতাল, আমার মা বলতেন, পেয়িং বেডে আমি আমার মায়ের সাথে ছিলাম।আমি নিশ্চিত ছিলাম,আল্লাহর রহমতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আমাকে খালি হাতে ফেরাবেনা। ইমারজেন্সির ফয়সাল কবির রজার্স, জাহেদুল হক, মেডিসিনের সকল অধ্যাপকবৃন্দ (প্রফেসর সুযত পাল, প্রফেসর আঃ সাত্তার, প্রফেসর অনিরুদ্ধ ঘোষ জয়) সকল সহযোগী ও সহকারী অধ্যাপকবৃন্দ বিশেষ করে ডা রবিউল আলম, ডা.এনশাদ একরামউল্লাহ, ডা.আবদুল্লাহ আবু সাইদ প্রতিদিন খোঁজ রেখেছেন।’

‘ডা.সত্যজিৎ মল্লিক, ডা.ফারহানা আক্তার নিয়মিত মনিটর করেছেন। রেসপিরেটরি মেডিসিনের ডা.একেএম মহিউদ্দিন, ডা.সরোজ চৌধুরী অনেক কষ্ট শিকার করেছেন। রেডিওলজির প্রফেসর সুবাস মজুমদার, ডা জাস্টিন ক্লাম্প সিটি রিপোর্ট এ অনেক কষ্ট করেছেন, কার্ডিওলজির ডা.খোরশেদ ভাই ইকো করেছেন।’

ডা. শিমুল আরও লেখেন, ‘একবারের জন্যও হতাশ হইনি, মহান আল্লাহ আমার খুব কাছেই ছিলেন।আমেরিকা থেকে আমার বন্ধু ক্রিটিক্যাল কেয়ার স্পেশালিস্ট ডা আদনানুল করিম নিয়মিত মেসেন্জারে পরামর্শ দিয়েছে যা, আমার পাথেয় ছিল। আমার বন্ধুরা ডা. নাসির, ডা. রোকন উৎকন্ঠিতভাবে আমার খবর নিয়ে যেত। সব বন্ধুরা অনেক দোয়া করেছে। আমার অনেক রোগী আমার জন্য নামাযের মাধ্যমে দোয়া চেয়েছে।আমার মেনটর রোবেদ আমিন স্যার নিয়মিত পরামর্শ দিয়েছেন। প্রফেসর এম এ হাছান স্যার আমাকে মূল্যবান পরামর্শ দিয়েছেন। আমি পাপী বান্দার জন্য এত মানুষ, দোয়া করেছেন যে আমি বাকরুদ্ধ।তবে, কয়েকটি কৃমিকীটকে আমি ক্ষমা করে দিতে চাই। করোনা মানুষ চেনাবে।করোনার শিক্ষা যদি বেঁচে থাকি কাজে লাগাব।’

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. শিমুল পোস্টের শেষাংশে লিখেন, ‘আমার টু পারসন আর্মি ছিল। আমার স্ত্রী, একহাতে সব সামলেছে, ছয়বার সিবিজি করা, হেপারিন দেয়া, সারারাত জেগে স্যাচুরেশন দেখা, কোরআান পড়া, ডাক্তারদের, নার্সদের সহায়তা করা সব করেও সে ছিল অবিচল। আমার আরেক ভরসা ছিলেন ডা এ কে এম মহিউদ্দিন মানিক। আমার ভায়রা তবে নিজের ভাই ই মনে করেন আমাকে। আগলে রেখেছেন পরম মমতায়। সবার জন্য দোয়া।’

‘এনেসথেশিয়ার হেড প্রফেসর কাজল স্যার নিয়মিত খোঁজ নিয়েছেন।মেডিসিনের ডা সাইফ, এনেসথেশিয়ার জাহেদ উল্লাহ, নেফ্রোলজিস্ট ডা রুশনী ভাই ও খোঁজ নিয়েছেন। আইসিইউর ডাক্তার আমার অত্যন্ত স্নেহের ডা মোহাম্মদ আবদুর রহমান চৌধুরী আমার জন্য যে কষ্ট করেছে তা বলে বোঝানো যাবে না। প্রতিদিন সে আমার এবিজি ও লাং আলট্রাসাউন্ড করেছে।নিজের ভাইয়ের মতই যত্ন নিয়েছে সে আমার।আল্লাহ তার ভাল করুক, আমিন।’

জানতে চাইলে ডা. এএসএম লুৎফুল কবির শিমুল সিভয়েসকে বলেন, ‘আমি দুইবার করোনা টেস্ট করিয়েছি দুই বারই নেগেটিভ এসেছে রিপোর্ট। এরপরও শরীর খারাপ হওয়ায় জেনারেল হাসপাতালে না গিয়ে নিজে যেখানে চেম্বার করি সেই ম্যাক্স হাসপাতালে থাকতে চেয়েছি। একটা কেবিন চেয়েছি আর অক্সিজনের ব্যবস্থা করতে বলেছি। তবে হাসপাতল সেটা করেনি।’

তিনি বলেন, ‘আমি সাড়ে ৫ বছর এই হাসপাতালেে চেম্বার করি। আমার স্ত্রীও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে এই ম্যাক্স হাসপাতালে চেম্বার করেন। মনে করেছিলাম নিজ হাসপাতালে আরামে থাকব সিকিউর থাকব। স্ত্রীও যেহেতু চিকিৎসক। কিন্তু ম্যাক্সের আমি শেয়ার হোল্ডার হয়েও এমডি লিয়াকত আলী যা করলেন আমার সাথে তা বলার ভাষা নেই। এবার পাবলিকের সাথে কী আচরণ করছে তারা বুঝে নিন।’

অবশ্য ম্যাক্স হাসপাতালের এমডি লিয়াকত আলী খান তাদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি ডাঃ লুৎফল কবির শিমুলের অভিযোগকে মিথ্যাচার মনে করেন।

তথ্যসূত্রঃ সিভয়েস/চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ভালো লাগলে এই পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
 

কপিরাইট সত্ত্ব-২০২২ ছাত্রছাত্রী ডট কম, কারিগরি সহায়তায়ঃ বিগবস সফট বিডি

Theme Customized By BreakingNews