1. admin@chattrachattri.com : admin :
  2. bigboss@yahoo.com : bb :
  3. shamkabir2003@gmail.com : shamkabir :
চুপ কথা! - ছাত্র-ছাত্রী ডট কম
বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০৪:৩২ পূর্বাহ্ন

চুপ কথা!

  • শনিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
  • ৪১৫ বার পড়া হয়েছে

মুরীদুল আলম চৌধুরীঃঃ করোনার প্রথম দিকের ধাক্কায় মনে করেছিলাম জগৎ সংসারে একটা অনিবন্ধিত পরিবর্তন অনিবার্য। বাহ্যিক পরিবর্তন। অন্তর্গত ( abstract quality) পরিবর্তনও। প্রত্যাশিত ছিলাম আমূল পরিবর্তনে। অপ্রয়োজনীয় আমোদ কমবে। প্রোমোদ তরী কমবে। তরী বেয়ে বহু কুসংস্কার চলে যাবে। কুপ্রথা কু-মুক্ত হবে। মননে আর চলনে শুদ্ধতার চাষ হবে। বিশ্বাস ছিল সামাজিক রীতিতে নীতি আসবে। সুনীতি। সুন্দর গতি পাবে। এটা রীতিমতো ভুল ধারণা ছিল। একবারে বড় ভুল (Gross mistake)।

সম্প্রতি করোনা কালে এক দাওয়াতে উচ্চপদস্থ আমলার সাথে আহার সঙ্গী হলাম। সাথে দ্বিতীয় শ্রেণির কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গও । চোখ কেড়েছে। মন কাড়তে পারেনি। সামাজিক অনুষ্ঠানে। পোষাকে উজ্জ্বল, ব্যক্তিত্বে অনুজ্জ্বল। আমরা এক টেবিলে। খাবারের কি যে বাহার! মাত্র সাড়ে দশ আইটেমর তরকারি ( সালাদকে অর্ধ আইটেম ধরে)। আমি ভোজন রসিক নই। সর্বভুকও নই। তার উপর স্বল্প আহারী। টেবিলে অপচয়ের মাত্রা দেখে মর্মাহত হলাম। পৃথিবী জুড়ে অসংখ্য লোক একবেলা খেতে না পেয়ে ক্ষিধার কষ্ট নিয়ে রাত কাটায় ( Globally about 690 million people go to bed on an empty stomach each night.) মনে মনে প্রত্যয় জাগে, সামাজিক কোনো দাওয়াতে সর্বোচ্চ তিনের অধিক ম্যানু থাকলে এমন ভেন্যু আমার জন্য পরিত্যাজ্যই শ্রেয়। ( ক্ষুধা মিটানোর জন্য এক তরকারি, রসনা বিলাসের জন্য দ্বিতীয় একটা আইটেম, গেস্ট হওয়ার সুবাদে সৌজন্য মিটাতে তৃতীয় আরেকটি আইটেম)। ত্রি-আমার পছন্দ। ত্রিরত্ন, ত্রিভুবন, ত্রিকন্যা,…। আমাদের প্রাণের বিদ্যাপীঠ দেওদীঘি কে, এম, উচ্চ বিদ্যালয়ের সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রয়াত প্রধান শিক্ষক ছিলেন অতি স্বল্পাহারী। ছিলেন নীরোগী। অথচ চলনে আর কথনে ছিলেন সাহসী। আপোষহীন। ব্যক্তিত্বে ছিলেন তুলনাহীন।

আমাদের সতেজ অনুভূতিগুলো নিস্তেজ এখন। নিষ্প্রাণ ও নিস্প্রভ। বর্ণহীন ধুসর। একেবারে মৃতপ্রায় মেকি মনে হয়। সবখানে রুক্ষতা। রুঢ়তা।প্রায় সবখানে অতৃপ্তি। অস্থিরতা। আরো চাই, আরো খাই। আরো, আরো। আমলা থেকে কামলা, আমতলী থেকে বড়ই তলী কিংবা সুন্দর বন থেকে আমাজান সর্বত্র হাহাকারের প্রতিধ্বনি। অতি পার্থিব চাওয় ( Materialistic demand) মানুষকে মানষিক দৈন্যতা বানাচ্ছে। রুচিতে বিকলাঙ্গ হচ্ছে। মুখে পুস্পিত সরল হাসি হারিয়ে যাচ্ছে। দিন দিন অনেকে আবার মেরুহীন হয়ে যাচ্ছে, দণ্ডহীনও।
অনেক সময় ক্ষমতার রাজনীতি মানুষকে বদলে দেয়। তছনছ করে দেয় নিজের জীবন। রাষ্ট্রীয় জীবন ব্যবস্থাও। লোভে টানে। ট্রাম্পকেও টেনেছিল। ক্ষমতা ছাড়বে না। হোয়াইট হাউজের সোনালী চাবি বাইডেনকে দিবে না। প্রয়োজনে সেই চাবি আটলান্টিকে নিক্ষেপ করবে। তবু দিবে না। এক সময়ের ক্যাসিনো ব্যাবসায়ী ট্রাম্প হয়তো জানতেন না, লোভের ইতিহাস সব সময় নিষ্ঠুর। অথবা জানলেও, মানতে নারাজ। আমরা ক’জনাই ইতিহাস থেকে শিখি! শুধু এক মোগল ইতিহাস পড়লেই তো রাজ্য লোভের পরিণতি অনেকটা জানা হয়ে যায়। সম্রাট শাহজাহানকে নিজ পুত্রের হাতে বন্দী জীবন কাটাতে হলো। ক্ষমতার লোলুপে আওরঙ্গজেব একে একে হত্যা করলো আপন সহোদরকে। আওরঙ্গজেব নিজের ভুল বুঝতে পেরেছিলেন। ততক্ষনে যমুনায় অনেক জল গড়িয়ে গেছে। শেষে আমজনতার মতো সাধারণ হতে চেয়েছিলেন – তাঁর ইচ্ছাতেই মার্বেল পাথরের পরিবর্তে শায়িত করা হয় সাধারণ কবরে।
শেষবেলায়, ট্রাম্পও কিছু সত্য বুঝেছিলেন। তাই বলে গেলেন, Money is the mother milk of Politics.
ট্রাম্প কিন্তু খুব বিচক্ষণও। সে হোয়াইট হাউস ছাড়লেও সহধর্মিণী ম্যানিলাকে ছাড়বেনা। তাই বিদায় বেলায় শেষ ভাষণে স্ত্রী মেনালিয়ার মন জয় করে নিলেন। ট্রাম্পের স্ত্রী এমনিতেই সুন্দরী। ট্রাম্প তার বর্ণনায় আরো গ্ল্যামার করে তুললেন, – ” But it’s been something very special, we’ve accomplished a lot, our first lady has been a woman of great grace and beauty and dignity!”.শুধু ট্রাম্প একা নয়, আমিও তাঁর সৌন্দর্য বিমোহিত। তিনি না থাকাতে হোয়াইট হাউসের সৌন্দর্যও অনেকখানি ম্লান। এই মেনালিয়া আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়ে আবার ফিরে আসলে আশ্চর্য হওয়ার কিছুই থাকবেনা। ভবিষ্যৎ কেউ বলতে পারেনা- ” মানবের ভবিতব্য কে বলিতে পারে! জগতের গতিবিধি করি দর্শন, জীবনের এই দীর্ঘ পথে, দারুণ এ সংসারে হতে পারে কতো তার উত্থান পতন! “
অং সান সু চী বার্মার একসময়ের ডি ফেক্টো ( De facto) অক্সফোর্ডের ডিগ্রীধারী। যৌবনে রূপবতী ছিলেন। ফিগার সচেতন ছিলেন। এখনো । এখন বয়স বেড়েছে রূপ কমেছে। সে তুলনায় গুণ একেবারেই কমে গেছে । তাঁর বাঁকা ঠোঁটের ইশারায় রাখাইন ষ্টেটে সাধারণ জনগনের উপর চালানো হলো স্টিমরোলার। স্টেনগান। গণহত্যা আর গণধর্ষণে বিশ্ব বিবেক কেঁপে উঠলো। সু চি’র কাঁপল না। বরং হাসলো। আমিও হেসেছিলাম – বিদ্রূপের। রাখাইনে ঘরে ঘরে আগুনে দিলো তার তাপে পুড়েছিল ধরণীর তরে অসংখ্য সবুজ হৃদয়! গেলো সপ্তাহে তার গদি উল্টে গেলো। এটাকে আমি বলি, Law of natural justice. প্রকৃতি অনেক সময় নিজেই প্রতিশোধ নিয়ে নেয়। তাঁর চলনে-বলনে অহিংসা ছিলোনা , ছিল অহংকার। রাখাইনদের তাড়িয়ে আরো বেশী হিংসুটে হয়ে উঠলেন। ঠিক যেন, ‘Absolute power corrupts absolutely’. ঘরে বাইরে নিন্দিত হলেন। কুকর্ম দোষে ভিলেন হয়ে গেলেন। বেশি উড়তে গিয়ে সামরিকের হাতে পাখা খোয়ালেন। এমন দশা হবে তা খোয়াবেও দেখেননি। সামরিক জান্তা বুঝতে পেরেছিলেন, “Where order is injustice, disorder is the beginning of justice.” এই সু চি’ই মিয়ানমারকে অশুচি করলো। মিয়ানমারের গণতন্ত্র এখন দূর আকাশের মিটিমিটি তারা। সামরিক জান্তা সু চী’কে একটা বাঁশি দিয়েছে। বাজে মালের দোকান থেকে কেনা বাঁশিটি এত বাজে যে একটুও বাজে না। আমি একটা সুখের বাঁশি কিনতে চাই- আসছে ফাগুনে বাজাবো বলে।

লেখকঃ ব্যাবসায়ী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯ ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র।

ভালো লাগলে এই পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
 

কপিরাইট সত্ত্ব-২০২২ ছাত্রছাত্রী ডট কম, কারিগরি সহায়তায়ঃ বিগবস সফট বিডি

Theme Customized By BreakingNews