টিউশনি করা ছাত্রদের কষ্টের কথা!
জয়নাল আবেদিন
সাধারণ ছাত্ররা সবসময়ই অবহেলিত।বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ এদের পাশে থাকার কথা থাকলেও, ছাত্রদের পাশে আসলে কেউ নেই। দাতারা মনে করে এদের মা-বাবা আছে, মা-বাবারা মনে করে এদের কাছেতো টিউশনির টাকা জমা আছে!আসলে এদের কষ্টের কথা কেউ বুঝতে চায়না। না মেসের জমিদার, না মুদি দোকানের সওদাগর, না মেস ম্যানেজার!
অন্যান্য পেশাজীবীদের মতো ছাত্রদের টিউশন বন্ধ। কিন্তু তারা কিভাবে চলে খবর নেয়ার কেউ নেই। যাদের বাবা-মায়ের অবস্থা মোটামুটি তাদের কথা বাদই দিলাম কিন্তু যাদের টিউশনির টাকায় তাদের পরিবার চলে? তাদের পরিবার-পরিজন কি খাচ্ছে, কিভাবে চলছে খবর ও নেয়ার কেউ নেই। অথচ বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসে ছাত্রদের ভূমিকা অবিস্বরণীয়।
লক্ষ ছাত্ররা হাজারো স্বপ্ন শহরের মেচের ব্যাচেলর টেবিলে রেখে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ফিরে আসা যেন এক ঝরে পড়ার আত্মকাহিনী। এই আত্মকাহিনী থেকে আজ নিরবে বের হচ্ছে পোড়া লাশের গন্ধ! করোনা ভাইরাস যে দৈহিক ক্ষতি করতেছে তার চেয়ে বেশী মানষিক ক্ষতি করছে টিউশনি করা ব্যাচেলর ছাত্র-ছাত্রীদের।
ছাত্ররা ক্ষুদে শিক্ষক। চক্ষুলজ্জায় কারো থেকে খুঁজতে পারে না। কারো কাছে যেতেও পারে না। লাইনে দাঁড়াতে ও পারে না। অভাব থাকার পরেও মধ্যবিত্তের ছদ্মবেশে আত্মপ্রকাশ না করার নাম ছাত্রসমাজ।
ছাত্ররা লাইনে দাঁড়িয়ে ত্রাণ নিতে না পারার কষ্ট কেউ বুঝেনা। তাদের না বলা কথা কে বুঝবে? সরকার প্রণোদনা দিচ্ছে নিম্মবিত্ত, মধ্যবিত্ত সহ বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের মধ্যে।কিন্তু ছাত্রদের জন্য কোন প্রণোদনা নেই, অথচ ছাত্ররা এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পরিচিত অনেকেই মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। লকডাউনে হয়তো ভালো খাবার কপালে না জুটলেও চিন্তা কিন্তু ঠিকই জুটে।
টিউশন করে পেট চলা ছাত্রদের ঈদ বোনাস নেই, প্রেজেন্ট বোনাস নেই, বিশেষ বোনাস নেই, রেশন-ভাতা নেই, কোন হেল্পিং কন্ডাক্ট নাম্বার নেই। অথচ একদিন টিউশনে না গেলে টাকা কাটা, টাইম মত না গেলে জবাবদিহিতা, একটু এদিক-ওদিক হলে টিউশনে আসতে নিষেধ করা সহ বিভিন্নভাবে কষ্ট ভোগ করে তবু কোন রকম চলতো কিন্তু এখন তো টিউশন নেই। অন্যান্য অভাবীদের মাথায় ছাতা দেয়ার জন্য সরকার ও বিভিন্ন পেশার মানুষ থাকলেও ছাত্রদের জন্য কেউ নেই!
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ ছাত্রদের দুঃসময়ে আপনি এগিয়ে আসুন। ছাত্রদের জন্য আপদকালীন বৃত্তির ব্যবস্থা করুন।
লেখকঃ জয়নাল আবেদীন,
এম. এস.এস, অর্থনীতি, চট্টগ্রাম কলেজ।
কপিরাইট সত্ত্ব-২০২২ ছাত্রছাত্রী ডট কম, কারিগরি সহায়তায়ঃ বিগবস সফট বিডি
Leave a Reply