জয়নাল আবেদীনঃ দীর্ঘ দেড় মাস পর দোকানপাট খুলবে, শপিংমল খুলবে, সবাই প্রস্তুতি নিচ্ছেন ব্যবসা চাঙ্গা করার, আর আপনি প্রস্তুতি নিচ্ছেন জমজমাট ঈদ শপিং করার? কিন্তু মধ্যবিত্ত শ্রেণির একটি বড় অংশের ঈদ শপিং দূরে থাক চুলায় ঠিকমত আগুন জ্বলছে না এ খবর কি আপনার-আমার আছে?
মানুষ সামাজিক জীব। আপনার পাশের অসহায় মধ্যবিত্ত, নিম্মবিত্ত লোকেরা লোকলজ্জায় মুখে কাপড় দিয়ে অন্যের ধারে ভিক্ষা করতে হয়, অন্যের দুয়ারে দুয়ারে টাকার জন্য, অল্প খাদ্যের জন্য হাত পাতে, স্কুলের জামা গায়ে দিয়া ছোট শিশুটি যখন মুখে হাত দিয়ে চেহারা কালো করে বসে থাকে এই দৃশ্য কি আমার-আপনার চোখে পড়ে? মা হারা, বাবা হারানোর বেদনা নিয়ে আল্লাহর সাহায্যের আশায় চেয়ে থাকা, অর্ধপেটে সেহেরি খাওয়া আর ইফতারির মেন্যু যার জন্য হয় শুধুই পানি, একটু ভালো খাবার যার কপালে খুব কমই জুটে। নিজেদের ক্ষুধাকে লুকিয়ে সন্তানের জন্য একটু খাবার সংগ্রহ করতে করোনার ঝুঁকি বুকে নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়ানো মানুষগুলোর সামনে আপনি কিভাবে শপিং করবেন আর নতুন কাপড় পড়ে ঈদ উৎযাপন করবেন?
একটু চিন্তা করে দেখবেন? আসলে কোথায় শান্তি? আপনার নতুন কাপড় পড়ে ঈদ পালন করা নাকি আপনার ঈদের জন্য কাপড় কিনার জন্য যে টাকা বাজেট করলেন সে টাকা গরীবদের মাঝে উপহার হিসাবে দিয়ে তাদের মুখে হাসি ফুটানো?
আপনার বাড়ির আলমারিতে অবশ্যই চকচকের কাপড় থাকবে, এই বছর অন্ততপক্ষে সে কাপড় পড়ে ঈদ পালন করুণ। ধরুন আপনি ১০,০০০(দশ হাজার টাকা) বাজেট করলেন কাপড় কিনার জন্য। কাপড় না কিনে যদি আপনি ২৫০০(দুই হাজার পাঁচশত টাকা) করে চারটি পরিবারকে উপহার দিলে কমপক্ষে একমাস পেটপুরে চারটা ডালভাত খেতে পারবে।
আপনি একদিন আনন্দ করবেন ১০,০০০ টাকার বিনিময়ে আর সে টাকা চারটা পরিবারকে উপহার দিলে একমাস আনন্দ পাবে। আনন্দ কোনটা বেশি? ক্ষুধার্ত মানুষগুলোকে পাশে রেখে নতুন কাপড় পড়ে সত্যি কি আনন্দ পাবেন?
চিন্তা করে দেখবেন প্লিজ!
লেখকঃ জয়নাল আবেদীন,
এম.এস.এস, অর্থনীতি, চট্টগ্রাম কলেজ।
কপিরাইট সত্ত্ব-২০২২ ছাত্রছাত্রী ডট কম, কারিগরি সহায়তায়ঃ বিগবস সফট বিডি
Leave a Reply