1. admin@chattrachattri.com : admin :
  2. bigboss@yahoo.com : bb :
  3. shamkabir2003@gmail.com : shamkabir :
প্রাক- করোনা বিশ্ব আর উত্তর- করোনা সময়, যেন সেকাল আর একাল। - ছাত্র-ছাত্রী ডট কম
বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০৭:৫৭ পূর্বাহ্ন

প্রাক- করোনা বিশ্ব আর উত্তর- করোনা সময়, যেন সেকাল আর একাল।

  • রবিবার, ৯ আগস্ট, ২০২০
  • ৪০৫ বার পড়া হয়েছে

কেউ বলে করো, কেউ বলে করো’না!! মাঝখানে ঠাঁই দাঁড়িয়ে- বসে পুরো বিশ্বের তামাশা দেখছে…. ‘করোনা’ নামক এক অদৃশ্য ভাইরাস!!

এক সপ্তাহ হতে চললো ইদের। সাহস করে ইদের তৃতীয় দিন আমরা একটু বের হলাম সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। মাঝপথে গিয়ে পুলিশের বাধায় আবারো ঘরমুখী!! মেয়েদের মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছিল না। সাড়ে পাঁচ মাস পর বের হয়েও…… বিনোদনের কবর হলো!!

আজকে অনেকদিন পর স্কুলে গেলাম। রিক্সা থেকে নেমেই বিশাল বিল্ডিংয়ের আগাগোড়া চোখ বুলাতে গিয়ে রচনা করলাম চোখে পানি! প্রতিটা সিঁড়ি যেন কথা বলছে আমার সাথে!! চকচকে দেয়ালগুলোও যেন আচমকা আমাকে দেখে অপ্রস্তুত!! জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে হলো, কেমন ছিলিস!! মনে পড়লো, ছোঁয়াছুঁয়ি মানার কথা!!

বিশাল শিক্ষক মিলনায়তনে বড্ড ফাঁকা অনুভব করলাম! আগে যেখানে সবাই গায়ের সাথে গা লাগিয়ে বসতাম!! এখন, ডিস্টেন্স মেইনটেইন করে বসা! এত ডিস্টেন্স!! মনে, আচরণে, কথাবার্তায়!!

ক্লাসরুমগুলো খাঁখাঁ করছে। রুক্ষতায় পূর্ণ চেয়ার- টেবিল। রুটিনে কোন কোন ক্লাস ছিল সবই ভুলতে বসছি! কথা হচ্ছে অনলাইন ক্লাস নিয়ে। শিক্ষক,শিক্ষার্থী নয়! এখন স্কুল মানে ল্যাপটপ আর ক্লাস মানে বাড়িতে বসে অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে শিক্ষেকর সাথে যোগাযোগ। কি অদ্ভুত!! কি অদ্ভুত!

আচ্ছা, শিক্ষার্থীদের সহপাঠীরা কোথায় এখন? একটু ছোঁয়া, পাশাপাশি বসে খুনসুটি করা কি তারা ভুলে গেছে এখন!!? বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষের জীবনে বাবা- মা, পরিবারের যেমন ভূমিকা রয়েছে, ঠিক তেমনি বন্ধু, সহপাঠীদের ও ভূমিকা রয়েছে।

আমার মেয়ে কয়েকদিন আগে ইচ্ছেমতো কান্না করছে দেখে জিজ্ঞেস করলাম… কি হয়েছে, তুমি কেন কাঁদছো? উত্তরে সে জানালো, আমি কি আর কোনোদিন আমার বন্ধুদের দেখতে পাবনা!! শিশুদের বড় হওয়ার সাথে সাথে তার বন্ধুদের সাহচর্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যাকে সমাজতত্ত্বের ভাষায় বলা হয়, ‘পিয়ার গ্রুপ’। তার ভাবনায়, চিন্তাগঠনে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তৈরিতে এই পিয়ার গ্রুপের ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি।

আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ। প্রখ্যাত কবি সুফিয়া কামাল কয়েক যুগ আগেই অনুভব করেছিলেন, এই সময়কার শিশুদের কথা। “আজিকার শিশু” কবিতায় তিনি যথার্থই লিখেছেন…..

 আমাদের যুগে আমরা যখন খেলেছি পুতুল খেলা,
 তোমরা এ যুগে সে বয়সেই লেখাপড়া কর মেলা।

আসলেই তো, লেখাপড়া তো মেলা করছেই! তার ওপর এখন প্রযুক্তি নির্ভর ভাবনা! অনলাইন ক্লাস আমার কাছে শুভঙ্করের ফাঁকির মতোই মনে হয়! দ্বিমত,বহুমত থাকতে পারে। ১০০ জনে যেখানে আশি, নব্বই জন শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকতো ক্লাসে! সেখানে অনলাইন ক্লাসের সুবিধা কতজন উপভোগ করতে পারবে!!? প্রয়োজনীয় ডিভাইস, ওয়াইফাই সুবিধা, ইন্টারনেট ডেটা প্যাক কেনার সামর্থ্য হয়তো সবার নাও থাকতে পারে! থাকলেও ঘনঘন লোডশেডিং তো আছেই।

বৈশ্বিক করোনা মহামারি সত্যিই শিক্ষাব্যবস্থাকে কোন পথে নিয়ে যাচ্ছে, তা ভাবার সময় এসেছে মনে হয়। একদিকে অর্থনৈতিক মন্দা অন্যদিকে অনলাইন শিক্ষার প্রসার। মহামারির আগে যেখানে আমরা আমাদের বাচ্চাদের মোবাইল, আইপ্যাড, ল্যাপটপে চোখ রাখলেই শাসাতাম, সেখানে নিজেরাই এখন স্বেচ্ছায় তুলে দিচ্ছি এই প্রযুক্তিগুলোকে। কোনটা ঠিক, কোনটা বেঠিক ভেবে কূল পাচ্ছিনা সচেতন অভিভাবক মহল।

তারপরও আমরা দু’চোখ পেতে স্বপ্ন দেখবো। বাঁচা-মরার এ লড়াইটাকে অন্যভাবে ধারণ করবো। আলোর পথে কাঁটাগুলোকে অতি সাবধানেই সরাতে হবে আমাদের। আমরা জিততে চাই। সুস্থ পৃথিবী বিনির্মানে আমাদের সবার অংশগ্রহণ একান্তভাবে কাম্য।

লেখকঃ সুলতানা কাজী,
সহকারি শিক্ষক(বাংলা)
অংকুর সোসাইটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম।।

ভালো লাগলে এই পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
 

কপিরাইট সত্ত্ব-২০২২ ছাত্রছাত্রী ডট কম, কারিগরি সহায়তায়ঃ বিগবস সফট বিডি

Theme Customized By BreakingNews