1. admin@chattrachattri.com : admin :
  2. bigboss@yahoo.com : bb :
  3. shamkabir2003@gmail.com : shamkabir :
করোনা কি বাংলাদেশে ব্যার্থ হবে? - ছাত্র-ছাত্রী ডট কম
বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০৩:৩৩ পূর্বাহ্ন

করোনা কি বাংলাদেশে ব্যার্থ হবে?

  • সোমবার, ৪ মে, ২০২০
  • ৯৭৯ বার পড়া হয়েছে

ড. জাকির হাওলাদারঃ ইতালি, ফ্রান্স, আমেরিকার মতো বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস এতো বেশী সুবিধা করতে পারবেনা আশা করি। আপনি হয়তো বলতে পারেন যে, দিন দিন তো আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তেছেই। উত্তরে আমি বলবো হ্যা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তেছে ঠিকই কিন্তু মৃত্যুর হার সেদিক থেকে সন্তোষজন। এতো অনিয়মের দেশে অবস্থা আরো ভয়াবহ হতে পারতো কিন্ত হয়নি।

আজকে বিকাল পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনাক্রান্ত নিশ্চিত হয়েছে ১০১৪৪ জন কিন্তু সুস্থ হয়েছেন ১২০৯ জন আর মৃত্যুবরণ করেছে ১৮২ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ১২০৯ জন ও ১৮২ জন বাদ দিলে বাকিদের অবস্থা কি?

এই উত্তর আসলে সহজ নয়। দিনদিন কিন্তু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তেছে এবং এই সংখ্যা আরোও মারাত্মক হারে বাড়বে মনে হয় কিন্তু মৃত্যুর সংখ্যা কমতেছে। ধরে নেন এদেশের শতকরা ৮০ ভাগ লোক আক্রান্ত হবে আবার পূর্নাঙ্গ লক্ষন প্রকাশের আগেই ভালও হয়ে যাবে৷ বাকি ২০ ভাগের ভিতর ৫% লোকের অবস্থার অবনতি হবে। করোনায় আক্রান্ত ভাল হয়ে যাওয়া অন্যদের বেলায় এখন পর্যন্ত প্রধান মেডিসিন হলো আল্লাহর দেওয়া এন্টিবডি।

ইউরোপ, আমেরিকার মানুষরা অধিকাংশই স্বাস্থ্য সচেতন। তাদের জীবনযাপনের মানও আমাদের চেয়ে উন্নত। অন্যদিকে আমাদের ঘনবসতির এই দেশে স্বাস্থ্য সচেতনতা খুবই কম, লকডাউনে অধিকাংশই নিয়ম মানছেনা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে করছে লুকোচুরি খেলা, স্বাস্থ্যসেবার মানও সুবিধাজনক নয়। দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তেছে অথচ গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে, মসজিদে জামায়াত পড়তে নিষেধ করা হয়েছে অথচ অনেকেই বাড়ির ছাদের উপর বিরাট জামাত করে নামাজ পড়ছে! অফিস ছুটির সুযোগে সপরিবারে গ্রামের বাড়ি গিয়ে অনেকে পিকনিজের মুডে আছে। করোনাক্রান্ত রুগী পালিয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার দৃষ্টান্ত পৃথিবীর আর কোথাও আছে?
এরপরেও ইতালি, ফ্রান্স, আমেরিকায় করোনাক্রান্ত হয়ে যেভাবে মারা গেল আমাদের দেশে অবস্থা আরোও ভয়াবহ হওয়ার কথা। কিন্তু সেরকম হয়নি। এ অবস্থার জন্য আসলে রহস্যটা কি?

চিকিৎসা বিজ্ঞানসূত্রে এখন পর্যন্ত যা জানলাম তাতে বুঝা গেলো এই ভাইরাস যখন গলায় বাসা বাধে তখন এন্টিবডি যুদ্ধ শুরু করে করোনার সাথে। অধিকাংশের ক্ষেত্রে করোনা এন্টিবডির কাছে পরাজিত হয়। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের ক্ষেত্রে এসময় ভাইরাস ফুসফুসে চলে যায়। ফুসফুসে ইনফেকশন করে ফেললে রক্ত চলাচলের নালিতে পানি জমে। তখন রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়। দেখা যায় একজন হার্টের রুগীর ফুসফুস আক্রান্ত হয়েছে। রক্ত সঞ্চালন ঠিকমত না পাওয়ায় হার্ট কার্যকারিতা হারায়। এভাবে বড়বড় রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তিরা বেশিমাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় যদিও এসময় এন্টিবডি ভাইরাসের রিরুদ্ধে লড়তে থাকে। কিন্তু আগের ভিন্ন রোগের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় লড়াই করার মত পর্যাপ্ত সময় আর থাকেনা।

এককথায় করোনাক্রান্ত হয়ে আবার সুস্থ হয়ে ওঠা পুরাটাই নির্ভর করে এন্টিবডি কার কতটা শক্তিশালী সেটার উপর।

এখন প্রশ্ন হলো করোনা শক্তিশালী এন্টিবডির কাছে হার মানে তাহলে ইউরোপ আমেরিকায় কেন মৃত্যুর মিছিল লেগে গেল? তাদের কি এন্টিবডি দূর্বল? আমার মনে হয় ভয়ের তাদের এন্টিবডি ধ্বংস হয়েছে। যারা একটু বেশি বয়সী তাদের এমনিতেই এন্টিবডি অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। একারনে বয়সীদের মৃত্যু ঝুঁকি বেশি। ইউরোপ আমেরিকায় বয়স্ক লোকের হার বেশি।

এবার আসি দেখি বাংলাদেশের মানুষের এন্টিবডি শক্তিশালী হওয়ার কারণ কি? আমাদের দেশের মানুষের খাদ্যভ্যাস একটু ভিন্ন রকমের। এদেশের মানুষরা অতিমাত্রায় মশলা জাতীয় খাবার খায়। যার অধিকাংশ ঔষুধী গাছ। আদা, রাসুন, কালি জিরা, মরিচ সবই শরীরের জন্য উপকারী যা ইউরোপ, আমেরিকা চীনের খাদ্য অভ্যাসে নেই। তাই ওদের থেকে বাংলাদেশের মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। দেখবেন একজন ইউরোপীয় ব্যাক্তিকে মশা কামড় দিলে সাথে সাথে ফুলে লাল হয়ে যায়। আর আমরা এডিস মশার দ্বারা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণের খবর পত্রিকায় না আসা পর্যন্ত মশার কামড়কে পাত্তাই দেইনা।

তারপরও বলতে হয়। সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে জরুরী প্রয়োজন ব্যাতিত বাইরে না যাওয়া এবং সচেতনতাই এই ভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকার সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি। সবাই ভাল থাকুন। ভাল থাকুক বাংলাদেশ।

লেখকঃ ড. জাকির হাওলাদার,
ডিস্ট্রিক্ট রোভার স্কাউট লিডার ( DRSL),
কক্সবাজার।

ভালো লাগলে এই পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
 

কপিরাইট সত্ত্ব-২০২২ ছাত্রছাত্রী ডট কম, কারিগরি সহায়তায়ঃ বিগবস সফট বিডি

Theme Customized By BreakingNews